1. info@jonomoth.com : admi2017 : জনমত নিউজ
  2. jonomoth24@gmail.com : Jonomoth .com : Jonomoth News .com
  3. wpsupp-user@word.com : wp-needuser : wp-needuser

হবিগঞ্জে বিশুদ্ধ পানি সংঙ্কটে ৮০ শতাংশ মানুষ, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক : পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু হবিগঞ্জে সর্বত্র নিরাপদ পানির সংঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলার ৮০ শতাংশ নলকূপে আর্সেনিক ধরা পড়েছে। এছাড়া, পৌরসভার পানিতেও রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত জীবানু। সব উৎস মিলিয়ে জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ অনিরাপদ পানি পান করছে। ফলে জীবন রক্ষাকারী পানি মরণঘাতি হয়ে দাড়িয়েছে।

জেলা গণস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলার ৮০ শতাংশ অগভীর নলকূপের আর্সেনিক ধরা পড়েছে। এর মধ্যে নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলায় অসহনীয় মাত্রায় রয়েছে প্রতি লিটারে ০.০৫ ভাগের বেশি আর্সেনিক। জেলার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পরিবার অসহনীয় মাত্রা ০.০৫ ভাগের উপরে আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করেছেন। আর সব উৎস থেকে অনিরাপদ পানি পান করে ৮০ শতাংশ মানুষ। ফলে আর্সেনিকে আক্রান্তের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।

তাদের তথ্যমতে জেলায় ৩ লাখ ৬২ হাজর ১৫৫টি পরিবার নলকূপে পানি পান করেন। সরকারীভাবে জেলায় ২২ হাজার ৬শ’ ১১টি স্যালু এবং গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যেও ত্রুটিজনিত কারণে ১ হাজার ৩শ’ ৬৭টি নলকূপ অকেজু অবস্থায় পরে রয়েছে। চালুকৃত নলকূপের সংখ্যা ২২ হাজার ২শ’ ৪৪টি।
এদিকে, ৭০ ফুট থেকে ১৪০ ফুট গভীরে স্থাপন করা নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের অসহনীয় মাত্রা ০.০৫ ভাগের উপরে রয়েছে। যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। ১৮০ থেকে ২৬৫ ফুট গভীরে স্থাপনকৃত স্যালু নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা সহনীয়। কিন্তু শুকনো মৌসুমে স্যালু-নলকূপের পানির লেয়ারের স্তর নিচে নেমে আসায় তখন নলকূপগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এসময় স্যালু-নলকূপের আওতাধিন লোকজনও উপরের স্তরের স্থাপনকৃত নলকূপের ০.০৫ মাত্রার বেশি আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করেণ। তবে ৫শ’ থেকে ৭১৫ ফুট নিচে স্থাপকৃত গভীর নলকূপের পানিতে কোন আর্সেনিক এখন পর্যন্ত ধরা পরেনি। যে উৎস থেকে পানি পান করে মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ।

জেলার নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলায় সবচেয়ে বেশি নলকূপগুলোতে অসহনীয় মাত্রায় আর্সেনিক পাওয়া গেছে। ওই দু’টি উপজেলা ঝুঁকি পূর্ণতায় রয়েছে। নলকূপের পানি গণস্বাস্থ্য বিভাগ অফিসে নিয়ে আসলে আমরা ফিতে আর্সেনিক পরীক্ষা করে থাকি। এছাড়াও লোকজন জানালে আমাদের অফিস থেকে মেকানিক গিয়ে নলকূপের পানি পরীক্ষা করেন।

প্রতি লিটার পানিতে ০.০৫ ভাগের উপরে আর্সেনিকের মাত্রা হলে লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। যদি সহনীয় মাত্রা আর্সেনিক থাকে সেটিতে সবুজ রং লাগানো হয়। এতে ওই নলকূপের পানি পান করা যুগ্য হিসেবে চিহ্নিত হয়।

এদিকে, পৌরসভার পানিতেও মাত্রাতিরিক্ত জীবানু রয়েছে বলে দাবি পৌর নাগরিকের। এ ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার অভিযোগ করেও কোন কাজে আসছে না।

জানা যায়, হবিগঞ্জ শহরের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ পৌরসভার পানি ব্যবহার করে থাকেন। যে পানিতে মাত্রাতিরিক্ত জীবানু রয়েছে। পৌরসভার পানি ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ধরণের রোগবালাইসহ চর্ম রোগের দেখা দিয়েছে। যা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।

পৌর নাগরিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার পানি সাপ্লাইয়ের পাইপগুলো পরিস্কার না করার কারণে পানিকে জীবানুর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। এই পানি জীবানু থাকার কারণে ব্যবহারকারী লোকজনের শরীরে বিভিন্ন রোগের দানা বাধছে। বিশেষ করে চর্ম রোগে ভূগছেন শহরের অধিকাংশ মানুষ। পৌরসভার পানিতে অতিমাত্রায় জীবানু থাকার কারণে অনেক সচেতন পরিবার এ পানি ব্যবহার থেকে দূরে সড়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে জানতে হবিগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র দীলিপ দাসের সাথে মোঠোফোনের যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অপরদিকে, দীর্ঘদিন ধরে বিশুদ্ধ পানি সংকটে ভুগছে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল। হাসপাতাল চত্বরে ৪টি টিউবওয়েল থাকলেও দীর্ঘদিন ধরেই তা অকেজো অবস্থায় রয়েছে। নামেমাত্র পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকলেও পানি সংরক্ষণের ট্যাংক ময়লার স্তুপে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় শতাধিক লোক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। এদের মধ্যে নারী ও শিশুদের সংখ্যাই বেশি। সেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে বেশির ভাগই নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত আয়ের। অথচ হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের পিছনে একটিমাত্র পানির ট্যাংকটি রয়েছে। আবার এটিও খোলা আকাশের নিচে ঢাকনা বিহীন অবস্থায় রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। শুধু তাই নয়, ট্যাংকটিকে ঘিরে হাসপাতালের ময়লা ফেলার অন্যতম স্থানে পরিণত হওয়ায় পঁচাবাসি দূর্গন্ধসহ আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে।

     এই ক্যাটাগরীর আরো খবর