ডেস্ক : ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এ ধর্মে মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সকল বিষয়ের পরিপূর্ণ সমাধান রয়েছে। নিচে রাতে ঘুমানোর নয় আমল উল্লেখ করা হলো।
এক. ডান পাশে শয়ন করা
হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতের শেষভাগে এগার রাকয়াত নামাজ আদায় করতেন। তারপর যখন সুবহি সাদিক হতো, তখন তিনি হালকা দু’রাকায়াত নামাজ আদায় করতেন। অতঃপর তিনি নিজের ডান পার্শ্বে কাত হয়ে বিশ্রাম নিতেন। যতক্ষণ না মুয়ায্যিন এসে তাঁকে নামাজের খবর দিতেন। (সহিহ বুখারি : ৬৩১০)
দুই . পবিত্র অবস্থায় রাত কাটানো।
হযরত বারায়া ইবনে আযিব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, যখন তুমি শোয়ার বিছানায় যেতে চাও, তখন তুমি নামাজের অজুর মত অজু করবে। এরপর ডান পাশের উপর কাত হয়ে শুয়ে পড়বে। আর এ দুয়া পড়বে,
” اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ.
উচ্চারণ : “আল্লাহুম্মা আসলামতু নাফছি ইলাইকা, ওয়া য়াজ্জাহতু ইলাইকা, ওয়া ফাওওাদতু আমরি ইলাইকা, ওয়া আলজায়তু জাহরি ইলাইকা, রাগবাতান ওয়া রহবাতান ইলাইকা, লা মালজায়া ওয়া লা মানজায়া মিনকা ইল্লা ইলাইকা, আমানতু বি কিতাবিকাল্লাজি আনজালতা, ওয়া নাবিয়্যিকাল্লাজি আরছালতা”
অর্থ : “হে আল্লাহ! আমি আমার চেহারাকে অর্থাৎ (যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে) তোমার হাতে সমর্পণ করলাম। আর আমার সকল বিষয় তোমারই নিকট সমর্পণ করলাম এবং আমার পৃষ্ঠদেশ তোমার আশ্রয়ে সোপর্দ করলাম। আমি তোমার গযবের ভয়ে ভীত ও তোমার রহমাতের আশায় আশান্বিত। তোমার নিকট ব্যতীত কোন আশ্রয়স্থল নেই এবং নেই মুক্তি পাওয়ার স্থান। তুমি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছ, আমি তার উপর ঈমান এনেছি এবং তুমি যে নবী পাঠিয়েছ আমি তাঁর উপর ঈমান এনেছি। ”
যদি তুমি এ রাতেই মারা যাও, তোমার সে মৃত্যু স্বভাবধর্ম ইসলামের উপরই গণ্য হবে। অতএব তোমার এ দুয়াগুলো যেন তোমার এ রাতের সর্বশেষ কথা হয়। রাবী বারায়া বলেন, আমি বললাম, আমি এ কথা মনে রাখবো। তবে بِرَسُوْلِكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ সহ। রাসূলুল্লাহ বললেন, না ওই ভাবে নয়, তুমি বলবে وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ (সহিহ বুখারি : ৬৩১১)
তিন. ঘুমানোর সময় কী দুয়া পড়বে?
হযরত হুযাইফাহ ইবনে ইয়ামান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বিছানায় আশ্রয় গ্রহণ করতে যেতেন, তখন তিনি এ দু’আ পড়তেন,
” اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا ”
অর্থ : “হে আল্লাহ! আপনারই নাম নিয়ে মরি আর আপনার নাম নিয়েই বাঁচি। ”
আর তিনি জেগে উঠতেন তখন পড়তেন,
” الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ ”.
অর্থ : যাবতীয় প্রশংসা সেই আল্লাহ্র জন্য যিনি আমাদের মৃত্যুদানের পর আবার আমাদের পুনর্জীবিত করেছেন। আর প্রত্যাবর্তন তাঁর পানেই। (সহিহ বুখারি : ৬৩১২)
চার. ডান গালের নীচে ডান হাত রাখা
হযরত হুযাইফাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নিজ বিছানায় শোয়ার সময় নিজ হাত গালের নীচে রাখতেন, তারপর বলতেন, হে আল্লাহ! আপনার নামেই মরি, আপনার নামেই জীবিত হই। আর যখন জাগতেন তখন বলতেন, সে আল্লাহ্র জন্য প্রশংসা, যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করলেন এবং তাঁরই দিকে আমাদের পুনরুত্থান। (সহিহ বুখারি : ৬৩১৪)
পাঁচ. ডান পাশে ঘুমানো
হযরত বারায়া ইবনে আযিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নিজ বিছানায় বিশ্রাম নিতে যেতেন, তখন তিনি ডান পাশের উপত নিদ্রা যেতেন। এবং বলতেন,
” اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ.
উচ্চারণ : “আল্লাহুম্মা আসলামতু নাফছি ইলাইকা, ওয়া য়াজ্জাহতু ইলাইকা, ওয়া ফাওওাদতু আমরি ইলাইকা, ওয়া আলজায়তু জাহরি ইলাইকা, রাগবাতান ওয়া রহবাতান ইলাইকা, লা মালজায়া ওয়া লা মানজায়া মিনকা ইল্লা ইলাইকা, আমানতু বি কিতাবিকাল্লাজি আনজালতা, ওয়া নাবিয়্যিকাল্লাজি আরছালতা”
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আমার সত্তাকে আপনার কাছে সমর্পণ করলাম, আর আমার বিষয় ন্যস্ত করলাম আপনার দিকে এবং আমার চেহারা আপনারই দিকে ফিরিয়ে দিলাম, আপনার রাহমাতের আশায়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি শয়নকালে এ দুয়াগুলো পড়বে, আর এ রাতেই তার মৃত্যু হবে। সে স্বভাব ধর্ম ইসলাম