নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী হবিগঞ্জের কৃতি সন্তান সুবীর নন্দী গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হয়েছেন। রোববার (১৪ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তাঁর মেয়ে ফাল্গুনী নন্দী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জনান, বর্তমানে একটু ভালো আছেন তার বাবা। দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তবে ফাল্গুনী সবার কাছে তার বাবার জন্য দোয়া চেয়েছেন। একই সঙ্গে হাসপাতালে দর্শনার্থীদের ভিড় না করতেও চিকিৎসকদের নির্দেশের কথা জানান তিনি।
সুবীর নন্দী হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়া মহল্লাযর এক কায়স্থ সম্ভ্রান্ত সঙ্গীত পরিবারে ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নানা বাড়ি শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাদেআলিশা গ্রামে। পিতা সুধাংশু নন্দী ছিলেন একজন চিকিৎসক ও সঙ্গীতপ্রেমী। মা পুতুল রানী চমৎকার গান গাইতেন কিন্তু রেডিও বা পেশদারিত্বে আসেননি। ছোটবেলা থেকেই তিনি ভাই-বোনদের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নিতে শুরু করেন ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে। তবে সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি মায়ের কাছেই। পড়াশোনার অধিকাংশ সময়ই তাঁর কেটেছে হবিগঞ্জ শহরে। তিনি হবিগঞ্জে দুটি সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজে লেখাপড়া করেছেন।
তিনি গানের জগতে আসেন ১৯৭০ সালে ঢাকা রেডিওতে প্রথম রেকর্ডিং এর মধ্য দিয়ে। ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। চলচ্চিত্রে প্রথম গান করেন আব্দুস সামাদ পরিচালিত সূর্যগ্রহণ চলচ্চিত্রে। ১৯৮১ সালে তার একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে বাজারে আসে। তিনি গানের পাশাপাশি দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন ব্যাংকে।
চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেছেন তিনি। আর চলতি বছরে সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার সুবীর নন্দীকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেছে।