“মায়ের দোয়া”
মোঃ রমজান আলী :
আমার মেয়ে বলতেছে,বাবা আজ(যেদিন বিশ্ব মা দিবস)মনে হয় “মা”দিবস।কীভাবে বুঝলে?এই যে মাকে নিয়ে সবাই লিখছে।ঠিক আছে তাহলে মাকে উইশ করো।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বরাদে জানলাম,দেখলাম হাজার হাজার মায়ের সন্তানদের মধু মাখা স্মৃতি বিজরিত কথা,অনুভূতি আবেগ ভালোবাসায় মোড়ানো উজার করে দেওয়া মনের গভীরের প্রশান্তির বাণী।যদিও আমার “মা”পৃথিবীতে নেই তবুও শত শত মায়ের মুখগুলো দেখে আমার মায়ের মুখ খানি চোখের কোণে জ্বলজ্বল করে ভাসছিলো।পূর্বের ইতিহাস জাহেলি যুগে,মায়ের জাত নারীদের অবস্থা মোটেও ভালো ছিল না।যদি কারো ঘরে কন্যা সন্তান জন্ম নিত তাহলে মুখমন্ডল কালো হয়ে যেত। এক পর্যায়ে ভাবতো কন্যা সন্তানকে রেখে দেব না মাটির নিচে পুতেঁ ফেলব।আল্লাহ পবিত্র কুরআনের “সূরা নাহল”- এ সম্পর্কিত সাবধান করেছেন(আয়াত ৫৮-৫৯)।এ পর্যন্ত যতগুলো সভ্যতা এসেছে তার মধ্যে হাজার বছরের পুরনো সভ্যতা “গ্রীক সভ্যতা”। এ সময় নারীদের মান মর্যাদা এত বেশি নিচে ছিল যে তাদেরকে শুধু মাত্র বাচ্চা পালনকারী ক্রীতদাসী ও বাদীর মতো মনে করা হতো।মায়ের প্রতি কতটা আস্থা,অনুভূতি থাকলে সন্তান তার থাকার ঘর মায়ের নামে রাখে।দেখা যায় অনেকেই বাড়ির নাম দেন “মা মন্জিল”, “মা ভিলা”। যোগাযোগ ও যাতায়াতে ও মায়ের দোয়া থাকবে না তা কী করে হয়।তাই তো পরিবহনেও লেখা থাকে “মা পরিবহন”,” মা-বাবার আশীর্বাদ”।খাবার হোটেলে ও লেখা থাকে “মায়ের দোয়া হোটেল”। এভাবেই মায়ের দোয়া নিয়েই সবাই বাঁচতে চাই।মাও তার সন্তানকে কতটা আগলে রাখে তা যে শুধু মানুষের মধ্যেই তা কিন্তু নয়,অন্য প্রাণীর বেলাও মায়ের অনুভূতি একই রকম।বাঘ দেখলে সবাই ভয় পাই,মানুষ খেকো বাঘ।এই মা বাঘ(বাঘিনী)ধারালো সুচালো দাঁত দিয়ে তার সন্তানকে আলতো ভাবে কামড় দিয়ে বাচ্চা বাঘকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়।প্রচুর বৃষ্টির মধ্যেও মুরগি তার বাচ্চাদের অতি যত্নের সাথে পাকনা দিয়ে এমন ছাতার মতো করে রাখে যাতে বাচ্চা গুলো না ভিজে। যদি ভিজেও যায় মুরগি তার বাচ্চার শরীরের পানিকে শুকানোর জন্য বার বার ঠোঁট দিয়ে ঝারা দেয়।কি মমত্ব, কি মায়া মায়ের বাচ্চার প্রতি।মা বক বাচ্চাদেরকে ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে আহার দেয়।বাচ্চা বকগুলো পাখনা নাড়ে আর খাদ্য গুলো পেঁটে নেয়।অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় পশু ক্যাঙ্গারু,কি সুন্দর বুকের ভেতর থলেতে বাচ্চাকে রেখে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ায়। পাহাড়ি উপজাতি “মা” পিঠের উপর বাচ্চা রেখে অবিরাম পরিশ্রম করে যাচ্ছে।এখানেও বাচ্চা তার মায়ের কাছে বেশি নিরাপদ।যত স্বাদ করেই রান্না করা হোক না কেন মায়ের হাতের রান্নার মতো স্বাদ আর কোথাও পাই না।তাই সন্তানের কাছে তার মায়ের হাতের রান্না সবার সেরা রান্না।এত কিছুর পরও বিদ্যাশ্রম গুলো মা-বাবা দের আশ্রয়স্থল হচ্ছে কেন?এ প্রশ্ন আমার আপনার সবার।ফকির আলমগীরের গাওয়া গানে,”মায়ের একধার দুধের দাম কাটিয়া গায়ের চাম
পাপোষ বানাইলে ঋণের শোধ হবে না,এমন দরদি ভবে কেউ হবে না
আমার মাগো”……
অফুরন্ত ভালোবাসা রইল সকল মায়ের প্রতি।