ষ্টাফ রিপোর্টার : হবিগঞ্জে মিথ্যা অভিযোগে ইউকে ভিত্তিক চ্যানেল এস এর সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম জীবনকে রাতভর বেধড়ক মারপিট করেছে পুলিশ। সেই সাথে মোমবাতি জালিয়ে তার পায়ূপথে ছ্যাকা দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
পরে তাকে ১০ পিস ইয়াবা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (১ জুন) বিকেলে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার সামনে বিক্ষোভ করেছে জেলায় কর্মরত সকল সাংবাদিক।
সিরাজুল ইসলাম জীবনের বোন পারভীন আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ধাক্কা দেয় পুলিশ। এ সময় ভেতরে থাকা জীবনের ছোট ভাই আজিজুল ইসলাম দোকানের সাটার খুলে দেয়। পুলিশ ভেতরে ঢুকেই তাদের হাতে থাকা একটি প্যাকেট দেখিয়ে মাদকসেবী হিসেবে তাকে আটক করে।
খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী বাসা থেকে জীবনসহ পরিবারের অন্যান্যরা ছুটে এসে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করলে তাদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাদেরকে লাঠিপেটা করে পুলিশ। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে অতিরিক্ত পুলিশ এসে তাদেরকে থানায় নিয়ে আসে। এরপর রাতভর চোখ বেধে এসআই রকিবুলের নেতৃত্বে তাদেরকে বেধড়ক মারপিট করা হয়।
আদালত প্রাঙ্গণে জীবন জানান, তাদের চোখ বেধে একনাগাড়ে মারধোর করা হয়েছে। এক পর্যায়ে পায়খানার রাস্তায় মোমবাতি দিয়ে ছ্যাকা দেয় এমনকি তার পায়ূপথে মোমবাতির ঝলন্ত গলিত পদার্থ তার পায়খানার রাস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে দেয় এসআই রকিবুলসহ কয়েকজন পুলিশ। পরে তাকে সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। সেখানে তার আঘাতের কারণ লেখা হয় গণপিটুনি।
নির্যাতনের স্বীকার সিরাজুল ইসলাম জীবন আদালত প্রাঙ্গণে বলেন, সদর থানার পুলিশ কোন কারন ছাড়া তাকে ও তার ভাইদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে রাতভর নির্যাতন করে। তবে পুলিশের দাবি, মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে তারা ওই দোকানে অভিযান চালিয়েছিল। সেখান থেকে ১০ পিস ইয়াবাসহ আজিজুলকে গ্রেফতার করা হলে জীবন তাতে বাধা দেন। রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন তারা।
এদিকে, এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুপুর আড়াইটায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে জরুরি বৈঠকে বসেন সাংবাদিকরা। এ সময় তারা অবিলম্বে জীবনের মুক্তি ও এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবি করেন। পরে বিকেলে সদর মডেল থানার সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে সাংবাদিকরা।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১০টায় সাংবাদিকরা আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার জন্য প্রেসক্লাবে বৈঠকে মিলিত হন। মধ্যরাত পর্যন্ত বৈঠক চলাকালে হবিগঞ্জ পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুরোধে আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। এদিকে রাতে সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম ও সদর সদর থানার ওসি ইয়াছিনুল হক হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন।