1. info@jonomoth.com : admi2017 : জনমত নিউজ
  2. jonomoth24@gmail.com : Jonomoth .com : Jonomoth News .com
  3. wpsupp-user@word.com : wp-needuser : wp-needuser
dav

অনিয়মের অন্য নাম চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

স্টাফ রিপোর্টার : চুনারুঘাট হাসপাতাল নানান অনিয়মের মধ্য দিয়ে চলছে। এখানে চিকিৎসা সেবা নাজুক পর্যায়ে পৌঁছার কারণে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কতিপয় ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও নিয়মিত পাওয়া যায় ১/২ জনকে। এর মধ্যে অভিযোগ রয়েছে, মেডিকেল অফিসার ডাঃ হায়দার আলী খন্দকার মাঝে মাঝে আসেন। যেন তিনি ওই হাসপাতালে বেড়াতে আসেন।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, তিনি নাকি কোনো এক পরীক্ষার অজুহাতে হাসপাতালে আসেন না। হাসপাতালের আরএমও ডাঃ মোঃ মোমিন উদ্দিন চৌধুরী প্রায়ই লম্বা ছুটিতে চুনারুঘাটের বাইরে অবস্থান করেন। তিনি এই ঘন ঘন লম্বা ছুটি কিসের বলে পান, তার সুস্পষ্ট ধারণা না থাকলেও ডাঃ মোমিন চৌধুরী জানান, ‘সরকারিভাবে তিনি এসব ছুটি পান।’

ফলে চুনারুঘাটের সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পাচ্ছেন না তাদের পূর্ণ মৌলিক অধিকার। এদিকে জুনিয়র কনঃ গাইনী ডাঃ মাহবুবা আফরোজ বেতন নেন চুনারুঘাট হাসপাতাল থেকে। আর প্রেষণে কমলাপুর রেলওয়ে হাসপাতালে সেবা দিচ্ছেন। এখানেও চুনারুঘাটের মানুষ বঞ্চিত। যেন দেখার কেউ নেই। আরো অভিযোগ রয়েছে, কর্তব্যরত ডাক্তার প্রায় রোগীকে সেবা না দিয়ে রেফার্ড করে দেন। ফলে বাড়তি কষ্ট পোহাতে হয় গরীব রোগীদের।

চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরের গেটে ৫০ শয্যার হাসপাতাল লেখা থাকলেও বাস্তবে ৩০ শয্যাও নেই। ফলে সাধারণ রোগীরা পড়ছেন বিপাকে। অন্যদিকে জনবল নিয়োগ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বরাদ্দ না দেয়ায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫০ শয্যাবিশিষ্ট চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমেেপ্লক্সটি নির্মাণকাজ সম্পন্নের ৯বছর পরও চালু করা যায়নি। হাসপাতালে ডাক্তার সংকটসহ নানা সমস্যা তো রয়েছেই। এ অবস্থায় চুনারুঘাটের ৪ লাখ জনগোষ্ঠী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জানা যায়, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চুনারুঘাটে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজ শুরু হয়। সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাসপাতালের কাজ সম্পন্ন হয় ২০০৯ সালের জুনে। নির্মাণকাজ শেষ হলেও হাসপাতালটি চালুর ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। মূল ভবন ছাড়াও সার্জন, ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের আবাসনের জন্য তৈরি করা হয় আরও তিনটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবন। ভবন তৈরির পর হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সার্জন, ডাক্তার, নার্সসহ কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়নি ৯ বছরেও। ফলে চালু করা যাচ্ছে না ৫০শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতাল। ফলে নতুন ভবনটি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পুরাতন ভবনে রোগীরা সিট পাচ্ছেন না। অথচ গেটের সাইনবোর্ডে ঠিকই লেখা রয়েছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল।

এদিকে হাসপাতালে ডাক্তার সংকট, কর্মকর্তা/কর্মচারী সংকট, দায়িত্বে অবহেলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। ইতোপূর্বে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল চালুর প্রস্তাব পাঠানো হলেও কেন চালু হচ্ছে না, তা কারো জানা নেই। সর্বোপরি বলা যায়, অনিয়ম ও ভোগান্তির অন্য নাম চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, কর্তব্যরত ডাক্তাররা নির্দিষ্ট টাইমের আগে তাদের কক্ষ ত্যাগ করেন। ফলে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা সেবা না পেয়ে শুকনো মুখ বাড়ি ফেরেন। ডাক্তাররা নানান অজুহাতে প্রায়ই ছুটিতে থাকেন বলে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর টিএইচও ডাঃ গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, নিদিষ্ট সময়ের আগে কোনো ডাক্তার কক্ষ ত্যাগ করার কথা না। যদি এমন হয় তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডাক্তারদের ঘন ঘন ছুটি নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ছুটি এনেই তারা ছুটি কাটান।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর আরএমও ডাঃ মোঃ মোমিন উদ্দিন চৌধুরীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, ‘যারা অভিযোগ করেছে তাদের জিজ্ঞেস করেন, আমায় বলেন কেন?’ ঘন ঘন ছুটির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি সরকারিভাবেই ছুটিতে থাকি।’
এভাবে ঘন ঘন ছুটিতে থাকলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবে বলে সচেতন মহল মনে করেন। এছাড়াও হাসপাতালে টাকা নিয়ে রোগী দেখা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

     এই ক্যাটাগরীর আরো খবর