নিজস্ব প্রতিবেদক : হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার ‘চিনাই নদীর’ উপর নির্মিত ব্রিজটি প্রায় ৫ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। নতুন কোন ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় পৈলারকান্দি ইউনিয়নের ও পাশ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার কয়েকটি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
ব্রিজ নির্মাণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দাবি এসব দেখার দায়িত্ব সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের।
জানা যায়, বানিয়াচং উপলোর পৈলারকান্দি ইউনিয়নের কুমড়ি বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ‘চিনাই নদীর’ উপর প্রায় শতাধিক বছরের পুরোনো ব্রিজটি চলাচলের সর্ম্পূণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তারপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটিতে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু ব্রিজটি জীবননাশের কারণ হতে পারে ভেবে স্থানীয় লোকজনই এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। প্রায় ৫ বছর ধরে এলাকাবাসী ব্রিজটি ব্যবহার করছে না। ফলে নদী পারাপারে তাদেরকে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ।
স্থানীয়রা জানান, শুকনো মৌসুমে নদীর উপরে বাঁশের চট বিছিয়ে নদী পারাপার হচ্ছেন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ সাধারণ মানুষ। আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া আর কোন উপায়ও নেই। নদী পাড় হতে গিয়ে অনেক সময় শিশু-বৃদ্ধরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। অথচ এই রাস্তা দিয়েই উপজেলাসহ জেলা সদরে আসতে হয় বানিয়াচং উপজেলার পৈলারকান্দি ইউনিয়নের ৫/৬টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে। সেই সাথে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার ২/৩টি গ্রামের আরও ৫ হাজার মানুষ তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন।
তারা আরও জানান, নতুন বা ব্রিজটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করার দাবি নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। কিন্তু চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে কোন কর্ণপাত করেননি।
জাহাঙ্গীর আলম নামের এক কলেজ ছাত্র বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি পরিত্যক্ত পড়ে আছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে আমরা ব্রীজটি ব্যবহার করছি না। ফলে আমাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন- ‘সামনে বর্ষা মৌসুম আসছে, তার আগে ব্রীজ নির্মাণ না করা হলে এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না।’
মো. জীবন মিয়া নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এলাকাবাসী ব্রিজটি নির্মাণের জন্য বার বার স্থানীয় চেয়ারম্যানের দুয়ারে ধর্ণা দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। ফলে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে আমাদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুকনো মৌসুমে শিশু ও বৃদ্ধরা বাঁশের চট দিয়ে নদী পাড় হতে গিয়ে অনেক সময় পড়ে গেয়ে খেয়ে আঘাত হন।
এ ব্যাপারে পৈলারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল রহমান খান বলেন, ব্রিজগুলো দেখা ইউনিয়ন পরিষদের বিষয় না। এগুলো দেখেন সংসদ সদস্য ও উপজেলার চেয়ারম্যানরা। আমরা শুধু বিষয়টি তাদের কাছে উপস্থাপন করতে পারি।
বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করেছেন কি না ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ঢাকা থেকে অনুমোদন আসলে পরে টেন্ডার হবে। এরপর ঠিকাদার কাজ শুরু করবেন।