নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নে হযরত শাহ তাজ উদ্দীন কুরেশী (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম চৌধুরীর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
জানা যায়, উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের হযরত শাহ তাজ উদ্দীন কুরেশী (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন প্রায় ৫ মাস পূর্বে অনুষ্ঠিত হয়। অভিভাবক সদস্যরা নির্বাচিত হলেও প্রধান শিক্ষক মো. হারুন মিয়ার নানা রকম অজুহাত দেখিয়ে সময় কালক্ষেপণ করায় অদ্যাবধ কমিটির সদস্যরা ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বভার গ্রহন করতে পারেননি। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত সদস্যদের না জানিয়েই একতরফাভাবে সাবেক কমিটির প্ররোচনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক একতরফা ভাবে উপবৃত্তির তালিকা চুড়ান্ত করেন। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সকালে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এস এম সেলিম আহমেদ, মো. হেলাল আহমেদ, মোছা. সাছনা বেগম, ভূমি দাতা সদস্য ও অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মো. নুনু মিয়া (মাস্টার) উপবৃত্তির তালিকার চুড়ান্ত করনের বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারুন মিয়া দুঃখ প্রকাশ করেন। ভবিষ্যৎয়ে বেতন মওকুপ সহ অন্যান্য বিষয়ে আগামীতে তাদের অগ্রাধিকার দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের কারনে অভিভাবক সদস্য ও এলাকাবাসীর ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করে। এ নিয়ে গতকাল বিকেলে স্থানীয় চৌধুরী বাজারে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর আয়োজনে শাহ্ তাজ উদ্দীন কুরেশী (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয়ের সুনাম ফিরিয়ে আনতে প্রধান শিক্ষক হারুন মিয়ার বিরুদ্ধে এক অভিভাবক সমাবেশের আয়োজনের ডাক দেন। এ নিয়ে চৌধুরী বাজার এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে । খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন হাসান, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে সমাবেশ না করার জন্য জানান। এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কোন অনিয়ম থাকলে বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। উপরোক্ত বিষয়ে উত্তেজনার নিরসনের লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হন এবং পরিস্থিতি শান্ত করে উল্লেখিত বিষয় গুলো সুষ্ঠুভাবে সমাধান করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষটি নিরসনের আশ্বাস প্রদান করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম।
এসময় যুক্তরাজ্য কমিউনিটি লিডার হাজ্বী তরাশ উল্লাহ, বাউসা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দীন, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী কাউসার আহমেদ, চৌধুরী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাতাব উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক ইসমত আহমেদ ইউপি সদস্য মো. ফিরোজ মিয়া ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে অভিভাবকদের সমাবেশস্থল ত্যাগ করার সম্মতি প্রকাশ করলে এলাকাবাসীরা সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন।
অপরদিকে ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সিদ্দিকের নেতৃত্বে পাল্টা আরেকটি সমাবেশ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তিনি তার সমাবেশ শেষ করে চলে যান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ চৌধুরী বাজারে সতর্ক অবস্থান নেয়।