এমনিতে দুই দলের মধ্যে অনেক ব্যবধান। তবে এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশের সেটি কমে এসেছে মূলত দুটি কারণে। প্রথমত, উপমহাদেশে অস্ট্রেলিয়ার বিবর্ণ পারফরম্যান্স। দ্বিতীয়ত, ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাফল্য। দুইয়ে মিলে অবস্থাটা এমন যে, অস্ট্রেলিয়াও আর এই সিরিজে নিজেদের একতরফা ফেবারিট ভাবতে পারছে না। বাংলাদেশে পা দিয়ে নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ তা বলেছেন। কাল একই কথা বললেন ড্যারেন লেম্যানও। বাংলাদেশে সিরিজ জেতাটাকে বড় চ্যালেঞ্জই মনে করছেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এর আগে চারটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। হেরেছে চারটিতেই, এর মধ্যে তিনটি তো ইনিংস ব্যবধানে। সর্বশেষ সিরিজটা এই বাংলাদেশের মাটিতেই—১১ বছর আগে। ২০০৬ সালে দুই দল সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল বলে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের বর্তমান দলের কারোরই একে অন্যের বিপক্ষে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তবে লেম্যানের সেই অভিজ্ঞতা আছে। খুবই সুখকর অভিজ্ঞতা। ২০০৩ সালে বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া সফরে ডারউইন ও কেয়ার্নসে দুটি টেস্টেই সেঞ্চুরি ছিল তাঁর।
তবে ওই বাংলাদেশ আর এই বাংলাদেশে বিস্তর ফারাক দেখছেন লেম্যান, ‘ওদের (বাংলাদেশের) একেবারে নিচের দিক পর্যন্ত ভালো কিছু ব্যাটসম্যান আছে। দেশের মাটিতে ওদের রেকর্ডও ভালো। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো খেলেছে। দলটার গভীরতা অনেক এবং দেশের মাটিতে আসলেই ভালো খেলে।’
এই বাংলাদেশকে ঘিরে পরিকল্পনাটাও একটু জানিয়ে দিলেন লেম্যান, ‘ওদের ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের তাই নতুন বলে দ্রুত আক্রমণ করতে হবে। আমরা ভারতের বিপক্ষেও সঠিক পথেই এগোচ্ছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেরে গেছি। এবার আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ দেশের বাইরে সিরিজ জয়।’
অন্য সব দল থেকে অস্ট্রেলিয়াকে সব সময়ই আলাদা করে দেয় অগাধ আত্মবিশ্বাস। সেটি ফুটে বেরোচ্ছে এবারও। নইলে কি আর দেশ ছেড়ে আসার আগেই স্টিভেন স্মিথ একরকম প্রথম টেস্টের একাদশ ঘোষণা করে দেন! লেম্যানও যেমন অন্য সব দলের মতো ঢাক ঢাক গুড় গুড় না করে জানিয়ে দিলেন তাঁর দলের পরিকল্পনা, ‘আমরা এখানে খুব বেশি খেলিনি। তবে আমরা জানি, কী করতে চাই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য উইকেট এবং কন্ডিশন দেখেই সিদ্ধান্ত নেব। তবে আমার মনে হয়, সম্ভবত আমরা দুই স্পিনার খেলাব।’
সেই দুই স্পিনারের একজন যে নাথান লায়ন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অ্যাস্টন অ্যাগার ও মিচেল সোয়েপসনের মধ্যে কে লায়নের সঙ্গী হবেন, জানার ছিল সেটাই। স্মিথ দেশ ছাড়ার আগেই বলে দিয়েছেন, দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে অ্যাগারই পছন্দ। ২০১৩ সালে টেস্ট অভিষেকেই ১১ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন অ্যাগার। যেটি ১১ নম্বরে কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড। কিন্তু অভিষেক সিরিজের পর আর টেস্টই খেলা হয়নি। তবে কাল লেম্যানের কথায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল, বাংলাদেশের বিপক্ষেই টেস্ট প্রত্যাবর্তন হচ্ছে বাঁহাতি এই স্পিনারের, ‘ও দারুণ লেংথে বল করে। গত বছর শেফিল্ড শিল্ডে তাঁর দারুণ একটা মৌসুম কেটেছে। তরুণ সোয়েপসনেরও লেগ স্পিনার হিসেবে ভালো সম্ভাবনা আছে। তবে অ্যাশটন ভালো ব্যাটিংও করে, ফিল্ডিংয়েও দারুণ।’