রায়হান আহমেদ, চুনারুঘাট : মাহবুব আলী ১৯৬১ সালে ১৭ জানুয়ারি মাধবপুর উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের বানেশ্বর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতা মরহুম মৌলানা আসাদ আলীও ছিলেন একজন জন প্রতিনিধি। আসাদ আলী ১৯৭০ সালে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রাদেশিক পরিষদের মাধবপুর এলাকার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
স্বাধীনতার পর জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সমন্বয়ে গঠিত কনষ্টিটুয়েন্টসি এসেমব্লির মেম্বার (এমসিএ) হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেন। ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে মাহবুব আলী ৪র্থ। তিনি স্থানীয় উম্মেতুন্নেছা হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করার পর ব্রাক্ষনবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমেডিট ও বিএ পাশ করেন। তিনি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জিএস পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। এলএলবি পাশ করার পর তিনি ১৯৯৬ সালে হাইকোর্টে আইন পেশায় যোগ দেন। ২০০৩ সালে তিনি সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। মাহবুব আলী সহকারি এর্টনী জেনারেলের দায়িত্বও পালন করেছেন ১৯৯৬ সালে। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক। তাঁর বড় ভাই এডভোকেট ফজলে আলী হবিগঞ্জের একজন সিনিয়র আইনজীবি। তিনি বার এসোসিয়েসশনের সাবেক সভাপতি ও সাবেক পিপি। মাহবুব আলী ২ কন্যার জনক। স্ত্রী শামীম জাফরিন গৃহিনী। বড় মেয়ে তানজি রাহবার অষ্ট্রেলিয়ায় আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিষয়ে পড়াশুনা করছেন। ছোট মেয়ে তাহরিনা জাফরিন আইনের ছাত্রী।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর হবিগঞ্জ জেলার ৪টি আসনের নির্বাচিত সাংসদ এডভোকেট মোঃ মাহবুব আলীকে মন্ত্রী করার দাবি করেছিলেন সংশ্লিষ্ট আসনের সমর্থক ও নেতাকর্মীরা।
নির্বাচনের পর দিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর থেকেই জেলাবাসীদের মধ্যে আলোচনায় ছিল এবার কে স্থান পাচ্ছেন মন্ত্রীসভায়। ৪ সাংসদই অধীর অপেক্ষায় ছিলেন কখন ফোন আসে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে। সব জল্পনা কল্পনা শেষে বছরের শুরুতে নতুন সরকারের মন্ত্রীসভায় স্থান পেলেন এডভোকেট মাহবুব আলী এমপি। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত মাওলানা আসাদ আলীর ছেলে অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ক্লিন ইমেজের এ রাজনীতিবিদকে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
রোববার বিকালে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। এদিকে, টিভি ও অনলাইন পোর্টালে মন্ত্রীদের তালিকা খবর ছড়িয়ে পড়লে মাহবুব আলীর সংসদীয় এলাকা মাধবপুর ও চুনারুঘাটসহ পুরো জেলাবাসী আনন্দে ফেটে পড়েন। একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান তাঁর শুভানুধ্যায়ী ও সমর্থকরা। তারা একজন নির্লোভ ও সৎ ব্যক্তিকে মন্ত্রী করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। আজ সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটায় নব নিযুক্ত মন্ত্রীদের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত,একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট ও মাধবপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকে ৩ লাখ ৮ হাজার ৭২৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মাহবুব আলী। যিনি সিলেটের সংসদীয় আসনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হওয়া সংসদ সদস্য। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ড. আহমদ আবদুল কাদের পান ৪৬ হাজার ১৮৩ ভোট ।