চুনারুঘাটের সিনিয়র সাংবাদিকদের প্রতি সচেতন মহলের আহ্বান- এখনই সময়, অপ-সাংবাদিকতা রুখতেই হবে। আপনারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন…
স্টাফ রিপোর্টার : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে কথিত সাংবাদিকদের অপসাংবাদিকতায় সুশীল সমাজসহ ক্ষীপ্ত সাধারণ মানুষ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এসব হলুদ সাংবাদিকদের অপসাংবাদিকতা ও অবাধ চলাচলে ক্ষোভ জানিয়েছে উপজেলার কর্মরত মূলধারার সাংবাদকর্মীরা। এ অবস্থায় নিজেকে সাংবাদিক বলে পরিচয় দিতেও বিব্রত বোধ করছেন মূলধারার সাংবাদিকরা। এ উপজেলায় দিনদিন শুধু বেড়েই চলছে এসব অপসাংবাদিকতা ও নামধারী সাংবাদিকের সংখ্যা।
স্থানীয় সংবাদকর্মী, সুশীল সমাজসহ অনেকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় এবং সরেজমিনে দেখা যায়, চুনারুঘাট ইউএনও অফিস, কৃষি অফিস, শিক্ষা অফিস, সাব রেজিষ্ট্রি অফিস, ভূমি অফিস, বন বিভাগের বিট অফিস, পৌরসভা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বেসরকারি ক্লিনিক এবং হসপিটাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চুনারুঘাট থানা পুলিশসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অফিসারদের ভয় দেখিয়ে মাসোহারা ভিক্তিক চাঁদাবাজি করছে কথিত সাংবাদিকরা।
এসব সাংবাদিক পরিচয়ধারীদের মধ্যে অনেকের নেই শিক্ষাগত ও সংবাদ লেখার যোগ্যতা। শুধু তাই নয়, ভঁয়াদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নিরক্ষর ব্যক্তিও আছেন।
বিনা দাওয়াতে সরকারি-বেসরকারি ও রাজনৈতিক বিভিন্ন সভা সমাবেশে দলবদ্ধভাবে উপস্থিত হয়ে এসব সাংবাদিকদের একের পর এক ক্যামেরার ফ্লাশে বিব্রত সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাসহ সাধারণ মানুষ।
এসব কথিত সাংবাদিকদের লেখা প্রতিবেদন আদৌ কোন সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল কিংবা অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয় কী না এমন সন্দেহ রয়েছে সচেতন মহলে। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ ইউটুব চ্যানেল খোলে চলছে তথাকথিত নামধারী সাংবাদিকদের অপসাংবাদিকতা।
এসব সাংবাদিক নামধারী অপসাংবাদিকদের নিকট পত্রিকা কিংবা টিভি চ্যানেল থেকে সঠিক কোন নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে তারা দেখাতে ব্যর্থ হয়।
উপজেলা প্রশাসনে নেই সাংবাদিকদের সঠিক কোন তালিকা। যার ফলে নিত্যদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চুনারুঘাট উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পয়েন্ট, সরকারি দপ্তরগুলো ও থানা পুুলিশের আশপাশে এসব কথিত সাংবাদিকরা একের পর এক রাজত্ব কায়েম করলেও উপজেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে নিরব ভূমিকায়।
এছাড়া গ্রাম থেকে আসা সাধারণ মানুষদের নিজেকে কখনো পুলিশ, কখনো ডিভি পুলিশ কিংবা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে বলে এমন অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। আর এসব কথিত হলুদ সাংবাদিকদেরকে শেল্টার দিচ্ছে স্থানীয় ও উপজেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ। এ সুযোগে মেতে উঠেছে এক শ্রেণীর কথিত নামধারী সাংবাদিকদের অপসাংবাদিকতা।
দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে এ উপজেলায় নামধারী সাংবাদিকতা। উপজেলায় কথিত সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিকতায় চরম বিপাকে আছেন অনেক সরকারি কর্মকর্তারা। এসব সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কোন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে মূমূর্ষ রোগীর মৃত্যু হলে নিহতের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়।
অপরদিকে উপজেলা পরিষদ ও ইউএনও অফিসসহ থানার আশপাশে এসব কথিত সাংবাদিকদের দিনভর আড্ডা এবং থানায় সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের হাজারো অর্থহীন প্রশ্নে বিব্রত করে ফায়দা লুটেরও অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ থেকে কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি কামরুল ইসলাম, চুনারুঘাট প্রেস ক্লাবের সাধারণ জামাল হোসেন লিটন, চুনারুঘাট রিপোর্টার ইউনিটির সভাপতি নুরুল আমিন, সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট উপজেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি খন্দকার আলাউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান আহমেদ জানান, হলুদ সাংবাদিকতা এ অঞ্চলের সাংবাদিকতাকে বিতর্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এ থেকে পরিত্রানের উপায় খোঁজার এখনই সময়।